২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

ঘটমান সংবাদ এ স্বাগতম।  সাথেই থাকুন।
হোমসব খবরবিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে সংক্রামক ভাইরাস মাঙ্কিপক্স

বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে সংক্রামক ভাইরাস মাঙ্কিপক্স

করোনা ভাইরাস মহামারি শেষ হয়নি। এরমধ্যেই বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে আরেক সংক্রামক ভাইরাস মাঙ্কিপক্স।

শনিবার মাঙ্কিপক্স ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় বৈশ্বিক ‘জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের কারন হচ্ছে মাঙ্কিপক্স নামের ভাইরাস। মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের প্রধান দুটি ধরন হচ্ছে, পশ্চিম আফ্রিকান ও মধ্য আফ্রিকান ধরন। এটি স্মলপক্স ভাইরাস শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, মাঙ্কিপক্সের প্রাথমিক লক্ষণগুলো হচ্ছে, জ্বর, মাথা ব্যথা, ঘেমে যাওয়া, পিঠে ব্যথা, মাংসপেশির টান ও অবসাদ। জ্বর কমলে শরীরে ফুসকুড়ি দেখা দেয়। অধিকাংশ ঘটনায় শুরুতে মুখে ফুসকুড়ি দেখা দেয়। পরে অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে হাতের তালু ও পায়ের তলায় ফুসকুড়ি ছড়ায়। সেই সঙ্গে আক্রান্তদের ত্বকে বসন্তের মতো দাগ দেখা দেয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে , মাঙ্কিপক্স ভাইরাসটি খুব অল্পতেই সংক্রমিত করতে পারে না, দীর্ঘক্ষণের সংস্পর্শ দরকার হয়। মাঙ্কিপক্স সংক্রমণ নতুন নয়, ১৯৭০ সাল থেকে বিভিন্ন সময় আফ্রিকার ১০টি দেশে বিক্ষিপ্তভাবে এর সংক্রমণ ঘটতে দেখা গেছে। ভাইরাসটিতে পূর্বে আক্রান্তদের প্রায় সবারই ভাইরাসটির উৎপত্তিস্থলের দেশগুলোতে ভ্রমণের ইতিহাস ছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে।

এ বিষয়ে বিশিষ্ট চিকিৎসাবিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ডা. লিয়াকত আলী বলেন, বর্তমান সময়ে এটা অস্বাভাবিক সংক্রমণ। এর আগে মাঙ্কিপক্স আফ্রিকার কিছু প্রত্যন্ত অঞ্চলে সীমাবদ্ধ থাকতো। সেটা অন্যান্য দেশে এবং উন্নত দেশে পৌঁছেছে। খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছাড়া এটার সংক্রমণ হয় না। যারা আফ্রিকা ভ্রমণ করেছে, তাদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের মাধ্যমে এটা হতে পারে। তবে এটা সেলফ লিমিটেড ডিজিজ। এই রোগের বিশেষ দিক হচ্ছে দৃষ্টি কটু হওয়ার ফলে, সে নিজেই নিজেকে আইসোলেট করে ফেলে।

তিনি আরও বলেন, এই রোগ আগে যেখানে প্রত্যন্ত অঞ্চলে দেখা যেত, সেটা এখন কিভাবে এতগুলো দেশে ছড়ালো দেখার বিষয়। এই ভাইরাস স্মলপক্স গোত্রের এবং ভ্যাকসিনেও কাজ করে। ভাইরাসটি মিউটেশন করে তার ধরন পরিবর্তন করেছে কিনা গবেষণার করে দেখতে হবে। কিংবা ধরন বদলের কারণে কী সহজে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে কি না তাও দেখার বিষয়।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের ঝুঁকির বিষয়ে তিনি  বলেন, বাংলাদেশে প্রায় সবার স্মল পক্সের টিকা দেওয়া আছে, তাই আমাদের দুশ্চিন্তার তেমন কারণ নেই। তারপরেও সরকার যেসব সতর্কতা অবলম্বন করেছে, সেগুলো ঠিকভাবে কার্যকর করা দরকার। এটা নিয়ে খুব বেশি আতঙ্কিত হওয়ার কিছুই নেই।

সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের সাবেক পরিচালক ও আইইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ বলেন, মাঙ্কিপক্সের ভাইরাস বানর থেকে একটা গবেষণার সময় পাওয়া গিয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি ভারতে মাঙ্কিপক্সের রোগী শনাক্ত হয়েছে, অপরদিকে আমেরিকায় বাচ্চাদের আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। এই দুটো ঘটনা আমাদের নতুন করে ভাবনার বিষয়। অর্থাৎ সমকামী বা উভয়কামী বাইরেও আক্রান্তের ঘটনা আছে। তবে ক্লোজ কন্টাক্ট একটা বড় বিষয়। ভারতে আক্রান্ত হলে, আমাদের জন্য চিন্তার বিষয়, কারণ অনেক বিষয়েই ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের মিল রয়েছে।

তিনি বলেন, আফ্রিকান দেশের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ কম, এটা আমাদের জন্য কিছুটা স্বস্তির বিষয়। তবে আফ্রিকায় আমাদের দেশের কিছু মানুষ ব্যবসা বাণিজ্য, চাকরি বাকরি এবং শান্তি রক্ষা মিশনে কাজ করেন।

বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে সংক্রামক ভাইরাস মাঙ্কিপক্স। তাই আমাদের সজাগ থাকতে হবে কারও মাধ্যমে এই ভাইরাস দেশে প্রবেশ করে কি না।

আরও পড়ুন: ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৬০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি

Print Friendly, PDF & Email

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

সর্বশেষ খবর

Recent Comments