অতি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সিলেট–সুনামগঞ্জের পর এবার ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, হবিগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাও বন্যায় প্লাবিত।
এবার ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া উপজেলার আজ অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নেতাই নদীর বাঁধ ভেঙে চারটি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ছয় শতাধিক পরিবার।
কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে চারটি ইউনিয়নের ২৮টি গ্রামের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
ঘোষগাঁওয়ে নির্মানাধীন বেড়িবাঁধ ও নেতাই নদীর পাড় ভেঙ্গে উপজেলার দক্ষিণ মাইজপাড়া, ঘোষগাঁও ও পুরাকান্দুলিয়া ইউনিয়নের পাঁচ শতাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গোয়াতলা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে।
অতি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সিলেট-সুনামগঞ্জের পর হাওরের আরেক জেলা নেত্রকোণাও ডুবছে; ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে জেলার আরও তিনটি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে।
শুক্রবার নেত্রকোনা জেলায় সারাদিনই থেমে থেমে মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত টানা দুই থেকে তিন ঘণ্টার বৃষ্টিতে পানি বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। শনিবার সকাল নাগাদ নতুন করে বানের পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে জেলার সদর, মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরী উপজেলা।
নেত্রকোণা জেলা সদর থেকে ঠাকুরাকোণা, দশধার, পাবই, গুমাই, গুতোরা হয়ে কলমাকান্দার সড়কটি বেশ কয়েক জায়গায় পানিতে তলিয়েছে। তবে এখনও এ পথে ভেঙে ভেঙে যান চলাচল করছে। অনেকে সড়কে গরু-ছাগল নিয়ে রেখেছেন। এ পথের পাশের অধিকাংশ সরকারি প্রাথমিক স্কুলেই পানি উঠে গেছে।
টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হবিগঞ্জের ৩টি উপজেলার বেশ কিছু অংশ প্লাবিত হয়েছে। অব্যাহতভাবে বাড়ছে খোয়াই, কালনী, কুশিয়ারা নদীর পানি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, কুশিয়ারা নদীতে শেরপুর পয়েন্টে ইতোমধ্যে ৮ দশমিক ২৫ মিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। বালুর বস্তা নিয়ে নদীর বাঁধ রক্ষায় প্রাণপণ চেষ্টা করা হচ্ছে।
শনিবার নবীগঞ্জ উপজেলার পাহাড়পুর গ্রামে কুশিয়ারা নদীর বাঁধ উপচে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। অনেক বাড়ীঘর পানির নিচে চলে গেছে।
হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলার ৩টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা প্লাবিত হয়েছে। ওই সকল এলাকার ১১শ’ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
এদিকে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে শুক্রবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার হাওড়া নদীর বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে আখাউড়ার সীমান্তবর্তী মোগড়া ও দক্ষিণ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। অনেক গ্রামীণ রাস্তাঘাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে।
হাওড়া নদীর বাঁধ ভেঙে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জেলার ১০ থেকে ১২ গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এদিকে আখাউড়া স্থলবন্দর এলাকার পাশ দিয়ে বয়ে চলা কালন্দি খাল দিয়ে ভারতীয় পানি বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। পানিতে আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট কার্যালয় ও কাস্টমস হাউজ এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুন:
বিদ্যুৎহীন সিলেট ও সুনামগঞ্জ, অন্ধকারে বানভাসি মানুষ
সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ হচ্ছে