আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় ফিরার দায় আমেরিকার ঘাড়েই চাপালেন জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেল। আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বাহিনী (ন্যাটো বাহিনীসহ) সরানোর দায় আমেরিকার নিতে হবে বলে মনে করেন জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেল।
তার দল সিডিইউ পার্টির নেতাদের সাথে বৈঠকে আফগানিস্তান প্রসঙ্গ নিয়ে নিজের মত প্রকাশ করতে গিয়ে এ কথা বলেন মের্কেল। তার মতে, তাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির কারণেই আফগানিস্তান থেকে হাত গুটিয়ে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যার জের ধরেই সে দেশে ক্ষমতায় ফিরেছে তালেবান।
আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের পর কেটে গেছে বেশ কিছু দিন। আফগানিস্তানে ক্ষমতার পালাবদলও ঘটেছে। ক্ষমতায় ফের ফিরে এসেছে তালেবান শক্তি। এই পরিস্থিতিতে আফগান পরিস্থিতি নিয়ে জার্মান চ্যান্সেলরের এমন মন্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
মের্কেলের মতে, আফগানিস্তানে সেনা মোতায়েনের দুই দশক পর সেখান থেকে ন্যাটোর সেনা প্রত্যাহারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আমেরিকাই নিয়েছে। তার মতে, অভ্যন্তরীণ রাজনীতির কারণেই এই অবস্থান নিয়েছে জো বাইডেন সরকার।
মের্কেল আরও বলেন, “আমরা সবসময় বলেছি, যুক্তরাষ্ট্র যদি থাকে তাহলে আমরাও থাকব। আমেরিকার সেনা প্রত্যাহারের ফলেই আফগানিস্তানে ফের তালেবান ক্ষমতায় ফিরে এসেছে।” খবর এএফপি’র।
আফগান কর্মী সহযোগী এবং তাদের পরিবার যারা জার্মান সেনা, দূতাবাসসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে জড়িয়ে ছিলেন এবং বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন, তাঁদের প্রাণের আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করে জার্মানি। সেই সংখ্যাটা আড়াই হাজারের বেশি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তাদের উদ্ধারের বিষয়ে ভাবা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন মের্কেল।
এছাড়া আরও অনেকে আফগানিস্তান থেকে বের হতে চায় বলে মনে করে জার্মানি। তার মতে, “যারা এই সময়ে স্বাধীনতার দিকে এগোচ্ছিলেন, বিশেষ করে আফগানিস্তানের নারীরা এবার তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হবেন বলে মনে হচ্ছে। তাদের সাহায্যের জন্য আমাদের যতটা দরকার এবং করা সম্ভব তা করতে হবে।”
আফগানিস্তান থেকে পশ্চিমা সেনাদের প্রত্যাহার হচ্ছে ন্যাটো প্রতিষ্ঠার পর তাদের জন্য ‘সবচেয়ে বড় পরাজয়’। জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেলের দলের প্রধানও এমন কথা বলেন।
ন্যাটো সেনা প্রত্যাহারের পর তালেবান দ্রুত ক্ষমতা দখল করায় সিডিইউ পার্টি প্রধান অর্মিন লসচাট বলেন, “এখন এটি সুস্পষ্ট যে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর এই অংশগ্রহণ সফল হয়নি। ন্যাটো বাহিনী প্রতিষ্ঠার পর তাদের জন্য এটা সবচেয়ে বড় বিপর্যয়।”
লসচাট বলেন, আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশটি থেকে জার্মান সেনাদের সরিয়ে নেয়ার ওপর আমাদের অবশ্যই সবচেয়ে বেশি জোর দিতে হবে।
লসচাট হচ্ছেন সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে চ্যান্সেলর হিসেবে মের্কেলের উত্তরাধিকারী নির্বাচিত হওয়ার ক্ষেত্রে সিডিইউ’র প্রার্থী।
তিনি বলেন, “আমাদের মিত্র দেশ এবং আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীকে সাথে নিয়ে এই উদ্ধার মিশনের পর এমন পরিস্থিতির কারণ ও পরিণামের ব্যাপারে আমরা আলোচনা করবো।”