তালেবানের দখলে এসেছে আফগানিস্তান। মাত্র দেড় মাসের মধ্যে তেমন কোন বাধা ছাড়াই পুরো আফগানিস্তান দখলে নিলো তালেবান বিদ্রোহিরা।
একের পর এক সব প্রাদেশিক শহর দখলে নেয়ার পর আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে প্রবেশ করে তালেবান বিদ্রোহিরা। তালেবানের কাবুলে প্রবেশ করার খবরে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করেন প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি।
ন্যাটো ও আমেরিকার কর্মকর্তাদের মধ্যস্ততায় ৪৫ মিনিটের এক বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রক্রিয়া নিয়ে তালেবানের সাথে আলোচনা হয় এবং এরপরই প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি তাজিকিস্তানের উদ্দেশে শহর ত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বরাতে রয়টার্স জানায়, প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি তাজিকিস্তানে পালিয়ে গেছেন।
বিবিসি জানায়, কাবুলে যাতে হামলা না হয় এমন শর্তে সমঝোতা হয়েছে তালেবান বাহিনীর সঙ্গে।
রোববার তালেবানরা চারদিক থেকে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে ঢুকতে শুরু করে। খবর পেয়ে প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি উপায়ন্তর না দেখে আমেরিকা ও ন্যাটোর শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যস্ততায় তালেবানের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেন।
বৈঠকে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরে রাজি হয় প্রেসিডেন্ট গানি এবং আফগান সরকার। এরপর শুরু হয় অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করে তালেবানরা।
প্রেসিডেন্টের বাসভবনে অনুষ্ঠিত হয় ৪৫ মিনিটের ঐ বৈঠক। বৈঠকে তালেবানের নেতৃত্ব দেন তালেবান প্রধান মোল্লা আবদুল গানি বরাদর। কাতার এবং আমেরিকা, ন্যাটো ও কাতারের কূটনীতিকরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। মোল্লা আবদুল গানি বরাদর আফগানিস্তানের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হতে পারেন বলে অনুমান করা যায়।
এভাবেই কার্যত তালেবানের দখলে এসেছে আফগানিস্তান এবং ফলত আমেরিকার নেতৃত্বাধীন ন্যাটো ও পশ্চিমা বাহিনীর পরাজয় বরণ দেখলো গোটা বিশ্ব।
এর আগে তালেবানরা রবিবার ভোরে জালালাবাদ এবং শনিবার আফগানিস্তানের চতুর্থ বৃহত্তম শহর উত্তরাঞ্চলের শক্ত ঘাঁটি মাজা-ই-শরীফ দখল করে নেয়।
আফগান প্রেসিডেন্ট মাত্র তিন দিন আগে জালালাবাদ শহরটি পরিদর্শন করেন। রবিবার ভোরে বাসিন্দারা জালালাবাদ দখলের দাবি নিশ্চিত করার পর এখন কাবুলও তালেবানের দখলে চলে এলো। এভাবেই পুরো আফগানিস্তান তালেবানের দখলে চলে এলো।
এ বছরের (২০২১ সাল) শুরুতে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা আসার পর গত ৯ মার্চ সেখান থেকে সেনা সদস্যদের সরিয়ে নিতে শুরু করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শুরু হওয়ার পরপরই তালেবান বাহিনী আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। জুনের শেষ দিকে দফায় দফায় আফগান নিয়মিত বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে তালেবানের।
এরপর দেশের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে আক্রমণ শুরু করে এগুতে থাকে তারা এবং একের পর এক শহর তাদের দখলে আসতে থাকে। শেষ পর্যন্ত মাত্র দেড় মাসের মধ্যেই পুরো আফগানিস্তান দখলে দখল নিয়েছে তালেবানরা।