হোম দেশ স্ত্রীকে যৌনপল্লিতে বিক্রি, স্বামীর ৭ বছরের জেল

স্ত্রীকে যৌনপল্লিতে বিক্রি, স্বামীর ৭ বছরের জেল

বরিশালে স্ত্রীকে যৌনপল্লিতে বিক্রির মামলায় স্বামী ফরিদ উদ্দিন মল্লিককে সাত বছর কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) বিকালে বরিশাল মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মঞ্জুরুল হোসেন এই রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে ক্ষতিগ্রস্ত নারীকে দুই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য দণ্ডপ্রাপ্ত ফরিদ উদ্দিনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আসামি গ্রেফতার বা আত্মসমর্পণের ৩০ দিনের মধ্যে ট্রাইব্যুনালের মধ্যেমে এই অর্থ পরিশোধ করতে হবে। নতুবা আসামির সম্পদ বিক্রি করে ক্ষতিগ্রস্ত নারীকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

রায় ঘোষণার সময় আসামি অনুপস্থিত থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি এবং সাজা পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

দণ্ডপ্রাপ্ত ফরিদ উদ্দিন উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের তারাবাড়ি এলাকার মৃত জয়নাল মল্লিকের ছেলে। তিনি স্ত্রী ফারজানা আক্তারকে নিয়ে বাবুগঞ্জ উপজেলার উত্তর রহমতপুর এলাকায় শ্বশুরবাড়ির পাশে ভাড়া বাসায় থাকতেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালের ৬ অক্টোবর শ্বশুর-শাশুড়ি বাড়িতে না থাকার সুযোগে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় যায় ফরিদ। পরদিন ফারজানাকে খুলনায় নিয়ে যৌনপল্লির মিন্টু সর্দারের কাছে বিক্রি করে দেয়। ২০ দিন পর ফরিদ ফের ওই যৌনপল্লিতে গিয়ে অবস্থান করতে থাকে। ফারজানার কাছ থেকে নিয়মিত অর্থও আদায় করতো ফরিদ। কিছু দিন পর মিন্টু সর্দার ফারজানাকে ওই পল্লির আরেক সর্দারনি হোসনে আরার কাছে বিক্রি করে দেয়। একপর্যায়ে ফারজানাকে নিয়ে মিন্টু সর্দার ও হোসনে আরার মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। প্রায় ২ মাস পর ১০ ডিসেম্বর খবর পেয়ে ফারজানার বাবা ও শ্বশুর খুলনার ফুলতলা থানা পুলিশের সহায়তায় ওই যৌনপল্লিতে গিয়ে ফারজানাকে উদ্ধার করে। এ সময় পুলিশ সর্দার মিন্টু ও সর্দারনি হোসনে আরাকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় ১২ ডিসেম্বর ফারজানার বাবা আবুল কালাম বাদী হয়ে অভিযুক্ত ফরিদ উদ্দিন এবং দুই সর্দার মিন্টু ও হোসনে আরাকে আসামি করে বাবুগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।

পরে দুই সর্দারকে অব্যাহতি দিয়ে ফরিদ উদ্দিনকে একমাত্র অভিযুক্ত করে ২০০৮ সালের ২০ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দেয় তদন্ত কর্মকর্তা। ট্রাইব্যুনালে পাঁচ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক ওই আদেশ দেন। গত ২২ মার্চ বরিশালে মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরুর পর এটি প্রথম রায়।

Print Friendly, PDF & Email

কোন মন্তব্য নেই

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

Exit mobile version