ফ্রান্সের ছোট গ্রাম ভেরিয়ার্সে সম্প্রতি শকুনের ধারালো নখ ও থাবার আঘাতে আহত হয়ে ৮৬ বছর বয়সী এক বৃদ্ধা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, দেশটিতে প্রথমবারের এই ঘটনাটি ঘটে। আক্রমণটি কয়েক মিনিট ধরে চলে এবং শকুনের ধারালো নখ ও থাবার আঘাতে বৃদ্ধার পা এবং হাতের হাড়ের মারাত্মক ক্ষতি হয়।
স্থানীয় মেয়র জেরোম মৌরিয়েস জানান, শকুনের আঘাতের কারণে বৃদ্ধার দুই আঙুলের মধ্যকার স্নায়ু ছিঁড়ে গেছে। এমনকি আঙ্গুলগুলোর কার্যক্ষমতাও হারিয়ে ফেলার ঝুঁকিতে রয়েছেন তিনি। শকুনটি এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি এবং ধারণা করা হচ্ছে এটি বন্য শকুন । খবর দ্য কানেকশনের।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) ফ্রান্সের গর্গেস দ্যু টার্ন এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। দেশটির পরিবেশবিদদের ধারণা, সেখানে সাম্প্রতিক সময়ে শকুন পুনরায় পরিবেশে ফিরে এসেছে।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষের উপর শকুনের আক্রমণ ফ্রান্সে বা বিশ্বের কোথাও ঘটেনি এর আগে। সাধারণত শকুন মৃত প্রাণী খেয়ে জীবন ধারণ করে কিন্তু সম্প্রতি তারা আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে।
এলাকার এলপিও সাধারণত শকুনগুলোর পুনর্বাসনের কাজ করে থাকে। তবে এ ঘটনায় বৃদ্ধার চিকিৎসার খরচ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে এলপিও বলে, তারা শুধুমাত্র পাখির জন্য সাহায্য দিয়ে থাকে।
অপরদিকে শকুনের আক্রমণে আহত বৃদ্ধার চিকিৎসা খরচ বিমার আওতায় পড়েনি। এতে আহত বৃদ্ধার চিকিৎসার খরচ যোগাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বৃদ্ধার পরিবারের।
স্থানীয় মেয়র জেরোম মৌরিয়েস স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বৃদ্ধার চিকিৎসার খরচ বহন করার কথা জানান।
জেরোম মৌরিয়েস বলেন, এলাকাটিতে শকুনের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে, এতে কৃষকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
স্থানীয় কৃষক সমিতির প্রধান রেমি আগ্রিনিয়ের জানান, শকুনগুলো শুধু মৃত প্রাণী খেয়ে বাঁচতে পারছে না। এ কারণে তারা আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছে এবং প্রায়ই গবাদি পশুর উপর আক্রমণ চালাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, শকুনের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং এলপিওকে দায়িত্ব নিয়ে এই সমস্যার সমাধান করতে হবে। ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
উল্লেখ্য এই অঞ্চলে ৮৫০টিরও বেশি প্রজননক্ষম শকুনের বসবাস রয়েছে এবং প্রতি বছর প্রায় ৫০০ নতুন শকুন জন্মগ্রহণ করছে। এই অঞ্চলে সংরক্ষিত পরিবেশে ৪টি প্রজাতির শকুনের বসবাস রয়েছে।
আরও পড়ুন : আন্তঃসীমান্ত সহিংসতায় ইসরাইলের আট সৈন্য নিহত