বৈরুতে একটি শক্তিশালী বিমান হামলায় ইসরায়েল হিজবুল্লাহ প্রধান সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যা করেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানায়।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী শনিবার বলেছে যে, তারা শুক্রবার বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলিতে হিজবুল্লাহ এর কেন্দ্রীয় কমান্ড সদর দফতরে হামলায় নাসরুল্লাহকে হত্যা করেছে।
হিজবুল্লাহও তাদের প্রধান নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে। তবে কিভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা নিশ্চিত করেনি।
নাসরাল্লাহর মৃত্যু হিজবুল্লাহ এবং ইরান উভয়ের জন্য একটি বড় ধাক্কা। ইরানের একজন প্রভাবশালী মিত্রকে সরিয়ে দিয়েছে ইসরায়েল, যিনি হিজবুল্লাহকে ইরান ও তাদের আরব বিশ্বের মিত্র গোষ্ঠীর জন্য অপরিহার্য হিসেবে তৈরি করতে সহায়তা করেছিলেন।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু নাসরুল্লাহর হত্যাকে “আগামীর জন্য এই অঞ্চলে ক্ষমতার ভারসাম্য পরিবর্তনের” একটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ বলে বর্ণনা করেছেন।
নাসরুল্লাহকে সন্ত্রাসী হিসেবে বর্ণনা করে নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে সামনের চ্যালেঞ্জিং সময়ের জন্য সতর্কবার্তা দিয়েছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নাসরাল্লাহর হত্যাকে ন্যায়বিচারের একটি পরিমাপক হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি হাজার হাজার আমেরিকান, ইসরায়েলি এবং লেবানিজসহ হিজবুল্লাহ কর্তৃক আক্রান্ত সকলের জন্য ন্যায্যতা হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকে পুরোপুরি সমর্থন করে।
তবে লেবাননে ইসরায়েলি স্থল অনুপ্রবেশ অনিবার্য কিনা জানতে চাইলে বাইডেন শনিবার সাংবাদিকদের বলেন, “এখন যুদ্ধবিরতির সময় হয়েছে।”
শুক্রবার বৈরুতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের একজন সিনিয়র সদস্য, ডেপুটি কমান্ডার আব্বাস নীলফরৌশানও নিহত হয়েছেন।
এক সূত্রের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, নাসরাল্লাহ হত্যার পর ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে ইরানে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
ইরান পরবর্তীতে লেবানন এবং এই অঞ্চলের (মধ্যপ্রাচ্য) অন্য কোথাও ইসরায়েলের এসব কর্মকাণ্ডের বিষয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের আহ্বান জানায়। এটি তাদের কূটনৈতিক স্থাপনা এবং প্রতিনিধিদের উপর যে কোনও হামলার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছে।
জাতিসংঘে ইরানের রাষ্ট্রদূত, আমির সাইদ ইরাভানি, ১৫ সদস্যের কাউন্সিলের কাছে এক চিঠিতে বলেন, “ইরান তার গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ও নিরাপত্তার স্বার্থে প্রতিরক্ষায় প্রতিটি পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে তার অন্তর্নিহিত অধিকার প্রয়োগ করতে দ্বিধা করবে না।”
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে রয়টার্স জানায়, শনিবার লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় ৩৩ জন নিহত ও ১৯৫ জন আহত হয়েছে।
শনিবার ভোরেও বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলিতে হামলা অব্যাহত ছিল, যা শহরের উপর ধোঁয়ার বিশাল মেঘ সৃষ্টি করে।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে রয়টার্স জানায়, গত দুই সপ্তাহে ইসরায়েলি হামলার ফলে ১০০০ এরও বেশি মানুষ নিহত এবং ৬,০০০ এরও বেশি আহত হয়েছে।
তাছাড়া শুক্রবার থেকে কয়েক লাখসহ লেবাননের প্রায় ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে লেবানন সরকারের সংকট প্রতিক্রিয়া সমন্বয়কারী মন্ত্রী নাসের ইয়াসিন শনিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন:
শ্রীলঙ্কার নতুন প্রধানমন্ত্রী শপথ নিলেন