আগামীকাল ২৮ সেপ্টেম্বর ‘আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস’ উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন বাণী প্রদান করেছেন। রাষ্ট্রপতির বাণী নিম্নে প্রকাশ করা হলো:
‘আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস’ উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতির বাণী
“তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিতকরণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ‘আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস-২০২৪’ উদ্যাপনের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই।
তথ্য জানা ও প্রাপ্তি মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। তথ্য মানুষকে সচেতন করে ও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ নং অনুচ্ছেদে জনগণের চিন্তা, বিবেক ও বাক্স্বাধীনতার নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়েছে। তথ্যের অবাধ প্রবাহ ও জনগণের তথ্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রণীত হয়েছে ‘তথ্য অধিকার আইন-২০০৯’ যা জনগণের তথ্য প্রাপ্তির অধিকারকে আইনি ভিত্তি প্রদান করে। আমি মনে করি, এ আইনের মাধ্যমে সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও সংবিধিবদ্ধ এবং সরকারি ও বিদেশি অর্থায়নে পরিচালিত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের পাশাপাশি সুশাসন প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়েছে।
জনগণের ক্ষমতায়ন, সরকারি দপ্তরে স্বচ্ছতা-জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতি প্রতিরোধ এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জনগণের তথ্যের অধিকার নিশ্চিতকরণের বিকল্প নেই। তথ্যের অবাধ, সঠিক ও সময়োচিত প্রকাশ একদিকে যেমন জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করবে; অন্যদিকে সুশাসন নিশ্চিত হবে, জনগণ ও রাষ্ট্রের মধ্যে আস্থার সম্পর্ক সমুন্নত থাকবে। সমাজ ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর জনগণের ক্ষমতায়নকে সুদৃঢ় করার মাধ্যমে নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় তথ্যের অবাধ প্রবাহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এ প্রেক্ষিতে UNESCO নির্ধারিত আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবসের এবছরের প্রতিপাদ্য- ‘Mainstreaming Access to Information and Participation in the Public Sector’ (রাষ্ট্রের মূলধারায় তথ্য অধিকারের সংযুক্তি এবং সরকারি খাতের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ) যথার্থ ও সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।
তথ্য অধিকার আইনের সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে তথ্য কমিশনসহ সরকারি-বেসরকারি সকল দপ্তর ও সংস্থাকে আরো উদ্যোগী মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। আইনের যথাযথ বাস্তবায়নের জন্য জনগণকে তথ্যের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট-মিডিয়া, নাগরিক সমাজসহ সকলের অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। আমি আশা করি, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তথ্য প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণের মাধ্যমে সমাজ ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর জনগণের ক্ষমতায়ন সুদৃঢ় হবে।
আমি ‘আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস-২০২৪’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সফলতা কামনা করি।
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”