কুমিল্লা জেলার ভয়াবহ বন্যায় ভিজে নষ্ট বই-খাতা বসতঘর ও জিনিসপত্র। কোনো কিছুই রক্ষা করতে পারেননি বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ। শুধু পরনের কাপড় নিয়ে ঘর ছাড়তে হয়েছে অনেকের।
কোনোভাবে জীবন নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছিলেন। তবে বাড়ি ফিরে দেখেন, নিজের ঘরটি দাঁড়িয়ে থাকলেও ঘরের আসবাবপত্রের পাশাপাশি বন্যায় ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে শিক্ষার্থীদের বই-খাতা।
অনেক শিক্ষার্থীর বই ভেসে গেছে বন্যার পানিতে। এখন চরম সংকটে এসব শিক্ষার্থীরা। অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে পড়াশুনা।
গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙ্গে উপজেলার অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি ওঠে। উপজেলার বিভিন্ন অনেক মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও কলেজে এখনো পানি রয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকার যেসব স্কুলে পানি ওঠেনি, সেগুলোতেও আশ্রয়কেন্দ্র ছিল।
ফলে চলতি বন্যায় শিক্ষাক্ষেত্র ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
কুমিল্লা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বন্যার ভয়াবহতায় প্রায় এক হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরমধ্যে ১০৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে। মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ ২০৫টি এবং ১২৩টি মাদ্রাসার বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় এসব প্রতিষ্ঠান খুব শিগগরিই চালু করা যাচ্ছে না।
তবে শিক্ষার্থীরা যেন স্কুলে কলেজে ফিরতে পারেন সেজন্য সরকারি সর্বোচ্চ সহযোগিতার কথা জানালেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।
বন্যার পানি কমে গেলেও হুমকির মুখে পড়েছে বন্যাকবলিত এলাকার শিক্ষা ব্যবস্থা। ঘরবাড়ি হারানো শিক্ষার্থীদের অনেকেই হারিয়েছে বই-খাতার পাশাপাশি স্কুল কলেজের পোশাকও। অনেক শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনও বন্ধের পথে। কারণ দুর্যোগে অনেকেরই বাবা মায়ের আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। চোখের সামনে সব হারিয়ে মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত শিশু-শিক্ষার্থীরা।
কুমিল্লা শিক্ষা বিভাগের তথ্য মতে, প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের চার শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অবকাঠামোগত ক্ষতির মুখে পড়েছে। সেজন্য দ্রুতই স্কুলগুলোতে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।
৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির হিসাবে কুমিল্লা জেলায় মোট ৪৩২টি প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। সংশ্লিষ্টদের মতে, যতদিন বন্যার পানি থাকবে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তাদের আশঙ্কা, স্কুল-কলেজ বিমুখ হতে পারেন অনেকেই অবকাঠামোগত ক্ষতির কারণে দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সচল না হওয়ায় ।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের তথ্য মতে, সাম্প্রতিক বন্যায় ১০৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ ২০৫টি এবং ১২৩টি মাদরাসা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দ্রুত চালু করা যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় আসা ১২৪টি গুরুত্বপূর্ণ এককথায় প্রকাশ