থাইল্যান্ডের সাংবিধানিক আদালত বুধবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুত চ্যান-ও-চা’ সরকারি দায়িত্ব থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। যা আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের মাত্র কয়েক মাস আগে তাকে নির্বাচনী ব্যবস্থা থেকে ছিটকে পড়ার মতো একটা আইনী চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুত সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতার শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছেন এই দাবি করে প্রতিবাদকারীরা তাকে অবিলম্বে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন। এখন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন উপপ্রধানমন্ত্রী প্রয়িট ওংসুওয়ান। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।
প্রায়ুত প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তার আট বছরের মেয়াদ শেষ করেছেন বলে বিরোধী দলগুলোর আনা একটি অভিযোগ আদালত সর্বসম্মতি ক্রমে শুনানি করতে সম্মত হয়।
আদালত এক বিবৃতিতে বলেছে, বিচারকগণ মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত প্রায়ুতকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার ব্যাপারেও সম্মত হয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রায়ুত প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তার অব্যাহতির পক্ষে (৫-৪) সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পড়ে এবং ২৪ আগস্ট, ২০২২ থেকে আদালতের রায় না হওয়া পর্যন্ত তা কার্যকর থাকবে।
প্রায়ুত চান-ওচা কে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলেও সাংবিধানিক আদালতে রায় যদি তার পক্ষে যায়, তাহলে তিনি আবার পদে ফিরতে পারবেন।
সরকারের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য একজন তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ করা হবে, বর্তমান উপ-প্রধানমন্ত্রী প্রবিত ওংসুওয়ান এই পদের জন্য পছন্দের প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন।
থাই রাজনীতিতে সেদেশের সাংবিধানিক আদালতের ভূমিকা পালন এটাই প্রথম নয়। এই আদালত ২০০৬ এবং ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে।
রাজতন্ত্রের দেশটির ২০১৭ সালের সংবিধান অনুয়ায়ী প্রধানমন্ত্রী মেয়াদ মোট আট বছর। বিরোধী দলগুলোর বলেছে, প্রায়ুত যিনি ২০১৪ সালের একটি অভ্যুত্থানে ক্ষমতা গ্রহণ করেছিলেন, তিনি মেয়াদ শেষ করেছেন।
আদালতের রুলিংয়ের আগে মঙ্গলবার কয়েকশ’ সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারী ব্যাংককের গণতন্ত্রের স্মৃতিস্তম্ভে সমাবেশ করেছে এবং তারা আরও বিক্ষোভের পরিকল্পনা করেছে।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুত চ্যান-ও-চা’ ২০১৪ সালে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করেন । এরপর গঠন করেন সামরিক কাউন্সিল। এর প্রধান হন তিনি। ২০১৯ সালে একজন বেসামরিক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন। তবে সেই নির্বাচন হয় সেনাবাহিনীর খসড়া সংবিধানের অধীনে। থাইল্যান্ডে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা আগামী বছর মে মাসে।