জিম্বাবুয়ের কাছে লজ্জাজনক হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে আগামীকাল হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে খেলতে নামছে সফরকারী বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে শুরু হওয়া ম্যাচটি টি-স্পোর্টস চ্যানেল সরাসরি সম্প্রচার করবে।
জিম্বাবুয়ের কাছে সিরিজের প্রথম দুই ওয়ানডেতেই ৫ উইকেটের ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। ফলে ২০০১ সালের পর আবারও জিম্বাবুয়ে কাছে হোয়াইটওয়াশের মুখে পড়েছে টাইহাররা।
নিশ্চিতভাবেই হোয়াইটওয়াশের স্বাদ নিতে চাইবে না বাংলাদেশ। এ সফরের শুরুতে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে জিম্বাবুয়ের কাছে ২-১ ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। যা এই ফরম্যাটে জিম্বাবুয়ের কাছে প্রথম সিরিজ হারের লজ্জা ছিলো টাইগারদের।
ওয়ানডে ফরম্যাটের ইতিহাসে এর আগে দু’বার জিম্বাবুয়ের কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিলো বাংলাদেশ। ২০০১ সালে প্রথম দুটি দ্বিপাক্ষীক সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিলো টাইগাররা। এরপর পূর্ণ শক্তির জিম্বাবুয়ে আর কখনও বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করতে পারেনি। তবে জিম্বাবুয়ের উপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছে বাংলাদেশ। যা কোন দলই কোন প্রতিপক্ষের সাথে পারেনি।
চলমান সিরিজের আগে ১৮টি দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে। এর মধ্যে ১২টিতে জয় এবং ৬টি হার টাইগারদের। তবে এই চলমান সিরিজ জিতে জয়ের সংখ্যাটা ৭’এ উন্নীত করেছে জিম্বাবুয়ে।
এই সিরিজ হারের আগে আফ্রিকান প্রতিপক্ষের বিপক্ষে টানা পাঁচটি সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। এই পাঁচটি সিরিজের সবকটিতেই জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করেছিলো টাইগাররা। ফলে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টানা ১৯ ম্যাচে জয়ের নজির গড়েছিলো বাংলাদেশ।
২০১৩ সালে সর্বশেষ জিম্বাবুয়ের কাছে ম্যাচ ও সিরিজ হেরেছিলো বাংলাদেশ। নয় বছর পর এসে চলমান সিরিজে জয়ের স্বাদ নিলো জিম্বাবুয়ে।
এই সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে জিম্বাবুয়ের তিন ব্যাটার চারটি সেঞ্চুরি করেন। এরমধ্যে দু’টি ছিলো সিকান্দার রাজার। প্রথম ম্যাচে রাজা অপরাজিত ১৩৫ রান করেন। তার সাথে ইনোসেন্ট কাইয়া ১১০ রান করেন। দ্বিতীয় ম্যাচে রাজার সাথে সেঞ্চুরি করেন অধিনায়ক রেগিস চাকাভা। চাকাভা ১০২ ও রাজা অপরাজিত ১১৭ রান করেন। এই সিরিজে প্রথম সেঞ্চুরির স্বাদ নেন কাইয়া ও চাকাভা।
প্রথম দুই ম্যাচে বাংলাদেশের চিন্তার কারন ছিলো ব্যাটিং ও ফিল্ডিং। ব্যাটিং উইকেটে বড় ইনিংস খেলতে পারেনি বাংলাদেশের ব্যাটাররা। দুই ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের চারটি সেঞ্চুরি করলেও বাংলাদেশের কোন সেঞ্চুরি নেই। দুই ম্যাচে ছয়টি হাফ সেঞ্চুরি করেছে বাংলাদেশের ব্যাটাররা। অথচ দুই ম্যাচে চারটি সেঞ্চুরিতেই বাংলাদেশের বিপক্ষে আগেভাগে সিরিজ জিতে নেয় জিম্বাবুয়ে।
ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মতে দলের সিনিয়রা বড় ইনিংস খেলতে না পারায় বাংলাদেশকে ভুগতে হচ্ছে। হারারেতে ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে ৩৩০ রানও নিরাপদ নয়। প্রথম ম্যাচে ৩০৩ রান করেও ম্যাচ হারে বাংলাদেশ। ৮৮ বলে ৬২ রান করেন তামিম। ৪৯ বলে ৫২ রান করেন মুশফিক। অন্য দু’টি হাফ সেঞ্চুরি ছিলো লিটন দাস ও আনামুল হকের। ইনজুরিতে আহত হয়ে অবসরের আগে ৮৯ বলে ৮১ রান করেন লিটন। আর আনামুলের ব্যাট থেকে আসে ৭৩ রান।
দ্বিতীয় ম্যাচে তামিম করেন ৪৫ বলে ৫০ রান। এর মধ্যে ৩৪ বলই ডট দেন তামিম। এই ম্যাচে ৮৪ বলে ৮০ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।
শেষ ওয়ানডে থেকে লজ্জাজনক হোয়াইটওয়াশ এড়াতে সেরা ক্রিকেট খেলার উপর জোর দিচ্ছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তিনি বলেন, সব কৃতিত্ব জিম্বাবুয়ের। এই সিরিজে সেরা দল তারা। আমাদের ঘুড়ে দাঁড়াতে হবে। আমরা আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলিনি এবং সে কারণেই আমরা এই অবস্থানে আছি। অন্তত একটা ম্যাচ জিততে হলে পরের ম্যাচে আমাদের সেরা খেলাটা খেলতে হবে। আশা করি আমরা আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলতে পারবো।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৮০ ম্যাচে ৫০টিতে জয় এবং ৩০টিতে হার বাংলাদেশের। তবে হোয়াইটওয়াশ এড়াতে দলে কিছু পরিবর্তন আনতে পারে টাইগাররা। পেসার শরিফুল ইসলামের জায়গায় একাদশে সুযোগ হতে পারে আরেক পেসার এবাদত হোসেনের।
আরও পড়ুন: জ্বালানি ও বিদ্যুৎ ব্যবহারে সকলকে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান: ওয়াসিকা আয়শা খান