হঠাৎ বসা থেকে অথবা শোয়া থেকে উঠে দাঁড়ালে অনেকেরই মাথা ঘুরে যায়। এই সমস্যায় ভুগে থাকেন অনেকেই। বসা অথবা শোয়া থেকে উঠে দাঁড়ালে কিছু সময়ের জন্য মাথা ঘুরে ওঠা বা চেতনা লুপ্ত হওয়াকে ভার্টিগো বা পোশ্চারাল হাইপোটেনশান বলে। বসা বা শোয়া অবস্থা থেকে দাঁড়াতে গেলে রক্তচাপ ২০ মিমি কমে যায়, যে কারণে মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন হঠাৎ কমে যায়। এই সমস্যা কয়েক সেকেন্ডের জন্য স্থায়ী হয় বলে এটি নিয়ে মাথা ঘামায় না অনেকেই। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সমস্যাকে অবহেলা করা ঠিক না। এটি ভবিষ্যতে বিপদের কারণ হয়ে দেখা দিতে পারে। চলুন জেনে নেই বসা থেকে উঠলেই মাথা ঘোরায় তার কারণ ও প্রতিকার-
কারণ:
* এই সমস্যার সঙ্গে স্নায়ুর সম্পর্ক আছে। অনেকেরই স্নায়ুর সমস্যার কারণে হঠাৎ শোয়া থেকে উঠলে অথবা বসা থেকে উঠলে মাথা ঘুরে যায়। কয়েক সেকেন্ডের জন্য চোখে অন্ধকার দেখা যায়। তাই এটিকে অবহেলা না করাই ভালো। কারো যদি এই সমস্যা থাকে তাহলে অবহেলা না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। কারণ অবহেলা করলে তার থেকে ভবিষ্যতে বড় ধরনের বিপদ হতে পারে।
* আবার অনেকের প্রেশারের কারণেও এই ঘটনা ঘটে থাকে। রক্ত চাপ কম থাকলে অনেক সময় উঠে দাঁড়ালে মাথায় সঠিক পরিমাণ রক্ত পৌঁছায় না যে কারণে অনেকের এই মাথা ঘোরার সমস্যা হতে পারে।
* ভার্টিগো অনেকের ক্ষেত্রে উচ্চতা থেকে হয়। পাহাড়ে বেড়াতে গেলে অনেকের এই সমস্যা দেখা যায়। বেশি উঁচুতে উঠলেও অনেকের এই সমস্যা হয়। অনেকের লিফটে হয়। এটিও স্নায়ুর সমস্যা।
* কোনও দুর্ঘটনার ফলে যদি দীর্ঘক্ষণ অজ্ঞান থাকে, তাহলে সেই সময়টার জন্য মাথার স্নায়ুতন্ত্রে স্থায়ী সমস্যা তৈরি হতে পারে। সেই সমস্যা থেকেও এই রোগ হতে পারে
* মাথা ঘোরাটাকে মস্তিষ্কের বিপদসংকেত হিসেবেই ধরা হয়ে থাকে, যা শরীরের বিভিন্ন অংশে নানাভাবে প্রকাশ ঘটায়। কারো ক্ষেত্রে হৃদপিণ্ডের বেশি উঠা-নামা, রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, অস্পষ্ট দেখা, মাথাব্যথা, বমিভাবও হয়ে থাকে।
প্রতিকার:
- হঠাৎ মাথা ঘুরতে থাকলে যে কাজটা করছিলেন সেই কাজ করা থেকে বিরত থাকুন। চিৎ হয়ে শুয়ে চোখ বন্ধ করে সহজভাবে শ্বাস নিন এবং সাহায্যের জন্য কাউকে ডাকুন।
- গাড়ি চালানো অবস্থায় এই সমস্যা দেখা দিলে পা ব্রেকের ওপর রেখে থেমে পড়ুন এবংপাশের আসনে শুয়ে পড়ুন ।
- দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকা যাবেনা। কারণ কাজের চাপে এক বেলার খাবার না খেলে এবং রক্তে চিনির মাত্রা কমে গেলে মাথা ব্যথা ও মাথা ঘোরার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- শরীরে পানির পরিমাণ কমে গেলে মাথা ঘোরার সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান করতে হবে।
- বিভিন্ন ওষুধ যেমন-অ্যান্টিহিস্টামিন, অ্যান্টিবায়োটিক, উচ্চরক্তচাপের ওষুধ ও আলসারের ওষুধ ইত্যাদি সেবনে মাথা ঘোরার উপসর্গ সৃষ্টি হতে পারে। কোন ওষুধ গ্রহণে এমন সমস্যা দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বসা থেকে উঠলেই মাথা ঘোরায় যাদের তাদের ভবিষ্যতে ডিমেনশিয়া অর্থাৎ সবকিছু ভুলে যাওয়ার অসুখ হতে পারে। এছাড়াও মাথায় নানা রোগের প্রাদুর্ভাব, হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে যাওয় ও স্নায়ুর সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাই অবহেলা না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
আরও পড়ুন: এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা স্থগিত