দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে গবেষণা ও উদ্ভাবনের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি আহবান জানিয়েছেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গবেষণার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় কক্সবাজারের হোটেল সী গার্ল এর সম্মেলন কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন ও দেশের ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) স্বাক্ষর ও ইনোভেশন ল্যাব কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান ও সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর রেজিস্ট্রারবৃন্দ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
অনুষ্ঠানে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি’র বিভিন্ন বিভাগের পরিচালকসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্রমধারা আরও ত্বরান্বিত করে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশের কাতারে স্থান করে নিতে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার কোন বিকল্প নেই। দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের চাহিদা উপযোগী মানবসম্পদ গড়ে তোলার দায়িত্ব নিতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গবেষণার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গড়ে তুলতে বিশ্ববিদ্যালগুলোকে শিল্প ও বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এছাড়াও শিক্ষামন্ত্রী প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষার মান উন্নয়নে একাডেমিক মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নের আহবান জানান।
কর্মশালায় জানানো হয়, দেশে উচ্চশিক্ষার প্রসার ও শিক্ষার গুণগতমান উন্নয়নের লক্ষে সরকার ইতোমধ্যে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে। উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য কারিকুলাম যুগোপযোগী করতে আউটকাম বেইজড এডুকেশন কারিকুলাম টেমপ্লেট প্রণয়ন, শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নয়নের জন্য ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারণের নির্দেশিকা অনুমোদন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের যোগ্যতা নির্ধারণ পলিসি, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশি-বিদেশি অভিজ্ঞ শিক্ষক নিয়োগের জন্য চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা প্রণয়ন, গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করাসহ অনেকগুলো কার্যকর পদক্ষেপ বাস্তবায়নের কাজ চলমান রয়েছে।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, একটি প্রতিষ্ঠানে/সংস্থায় সেবা প্রদানে গতিশীলতা আনা,দক্ষতা বৃদ্ধি এবং দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সরকার ২০১৪-১৫ সাল থেকে দেশে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) প্রবর্তন করে।
ইউজিসি চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। ইউজিসি সদস্য ও এপিএ টিমের আহবায়ক অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর এবং অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ।
শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি আনয়নের মাধ্যমে ও একটি সুখী সমৃদ্ধিশালী দেশে গঠনে বর্তমান সরকার বিভিন্ন রূপরেখা প্রণয়ন করেছে যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে-২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন, ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ অর্জন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশের কাতারে স্থান করে দেওয়া, ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ও ডেল্টা প্ল্যান। এসব পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়ন অনেকাংশেই নির্ভর করছে বাংলাদেশের বিশবিদ্যালয়গুলোর কর্মদক্ষতার ওপর। গুণগত শিক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমে উদ্ভাবন ও দক্ষ জনবল তৈরি করা না গেলে এসব পরিকল্পনার যথাযথ বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না।
অনুষ্ঠানে ৫১ টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও এপিএ’র ফোকাল পয়েন্ট উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০১৬-২০১৭ অর্থবছর থেকে ইউজিসি প্রতিবছর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এ চুক্তিটি স্বাক্ষর করে আসছে। ৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি বলে ৪৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: এসএসসি পরীক্ষার সংশোধিত রুটিন প্রকাশ