ধর্মীয় সংগঠন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় আমির জুনাইদ বাবুনগরী মারা গেছেন। চট্টগ্রাম শহরের একটি হাসপাতালে আজ বেলা পৌনে ১টার দিকে তিনি মারা যান। খবর বিডিনিউজ২৪.কমের।
আজ বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে অসুস্থ অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম শহরের সিএসসিআর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে হলে বেলা পৌনে ১টার দিকে সেখানকার দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জুনাইদ বাবুনগরী রাত থেকেই অসুস্থ বোধ করছিলেন। সকালে পরিস্থিতির অবনতি হলে তাকে হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে চট্টগ্রামের প্রবর্তক মোড়ে সিএসসিআর হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু দ্রুত তার শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল প্রায় সত্তর বছর। জুনাইদ বাবুনগরী হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় আমিরের পাশাপাশি চট্টগ্রামের হাটহাজারী আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার পরিচালক ছিলেন। তিনি হৃদরোগসহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত ছিলেন।
সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ঘটনায় আলোচিত সমালোচিত ছিলেন হেফাজতে ইসলামের এই নেতা। গত বছর ১৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের হাটহাজারী আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার মহাপরিচালক যিনি দীর্ঘ প্রায় ৩৪ বছর ধরে এই দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন এবং সে সময়ের হেফাজতে ইসলামের আমির আহমদ শফী মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর পর চলতে থাকে নানা ঘটনাপ্রবাহ। এরই মধ্যে হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ নেতৃত্বে আসেন জুনাইদ বাবুনগরী।
এ সময় আহমদ শফীর ‘মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল না' দাবি করে মামলা করেন তার শ্যালক। সেই মামলাতেও আসামি ছিলেন জুনাইদ বাবুনগরী।
পরবর্তীতে পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে জুনাইদ বাবুনগরীসহ ৪৩ জনকে আহমদ শফীর মৃত্যুর জন্য দায়ী হিসেবে পাওয়ার কথা বলা হয়েছিল।
বাবুনগরী অবশ্য সেসময় ওই তদন্ত প্রতিবেদনকে ‘উদ্দেশ্য প্রণোদিত' আখ্যায়িত করে বলেছিলেন, আহমদ শফীর ‘স্বাভাবিক' মৃত্যু হয়েছে।
পরে গত ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপনের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফর ঘিরে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় কয়েক দিন ধরে তাণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলামের কট্টরপন্থী নেতাকর্মীরা। এসব ঘটনায় কয়েকটি মামলায়ও আসামী হিসেবে সংগঠনের প্রধান এবং নির্দেশদাতা হিসেবে জুনাইদ বাবুনগরীর আসে।
এর আগে তার সময়েই গত বছরের শেষ দিকে ভাস্কর্যবিরোধী আন্দোলনে নামে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম এবং তারা সেসময় নতুন করে আলোচনায় আসে।