কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার দেশের কৃষিখাতের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করছে।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের মহামারি পরিস্থিতিতে খাদ্যসংকট মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুয়ায়ী প্রতি ইঞ্চি জমিকে চাষের আওতায় আনতে সম্প্রতি ৪৩৮ কোটি টাকার প্রকল্প নেয়া হয়েছে।
মন্ত্রী আরো বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় ও অনাবাদি জমিতে পারিবারিক পুষ্টিবাগান স্থাপন করা হবে। এতে খাদ্য উৎপাদন আরও বৃদ্ধি হবে।
ড. আব্দুর রাজ্জাক আজ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) কৃষিবিদ সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
নতুন জাতের ফসলের বীজের উৎপাদন ও বিতরণে আরও শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে বিএডিসির কর্মকর্তাদের আহ্বান জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী আরো বলেন, দেশে বীজ, সার, সেচসহ কৃষি উপকরণের প্রাপ্তি ও বিতরণে বিএডিসির ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। আমাদের গবেষক ও বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যে ফসলের অনেক উন্নত জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন। দ্রুত এসব জাতের বীজের উৎপাদন ও কৃষক পর্যায়ে বিতরণ করতে হবে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার কৃষিবান্ধব সরকার। আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি, এখন নিরাপদ ও পুষ্টিসম্মত খাদ্যের নিশ্চয়তা দিতে কাজ করছি। সেটি অর্জন করতে হলে কৃষিবিদদেরকে আরও কঠোর ও শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে হবে।
‘দেশে ৫ লাখ ভারতীয় বিনা পাসপোর্টে কাজ করে’ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সাম্প্রতিক এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করে ড. রাজ্জাক বলেন, তিনি (ডা. জাফরুল্লাহ) নিজেকে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও বুদ্ধিজীবী বলে দাবি করেন, আমি সেটাকে সম্মান করি। কিন্তু তিনি যখন বলেন যে, ‘দেশে ৫ লাখ ভারতীয় বিনা পাসপোর্টে কাজ করে’ এই ধরনের তথ্য তিনি কোথায় পেলেন? কোন তথ্যের ভিত্তিতে তিনি এ মন্তব্য করেছেন? এটি একটি বিভ্রান্তিকর তথ্য। তিনি জাতিকে বিভ্রান্ত করতে এসব কথা বলছেন।
মন্ত্রী বলেন, ১৯৪৭ সাল থেকে পাকিস্তানীরা এ ধরণের বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে ও ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে ২৩ বছর শোষণ করেছিল। দেশের একদল বুদ্ধিজীবী, রাজাকার, আলবদর ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি মুক্তিযুদ্ধের সময় ‘ভারত বাংলাদেশ দখল করে ফেলবে’ এমন মিথ্যাচার ও জুজুর ভয় দেখিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল।
এ বিষয়ে তিনি আরো বলেন, সেই একই গোষ্ঠী, স্বাধীনতা বিরোধীশক্তি, পাকিস্তানের এ দেশিয় দোসর ও সহযোগীরা বিভ্রান্তীমূলক ও ভিত্তিহীন তথ্য দিয়ে, মিথ্যাচার করে জাতিকে এখনও বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।
কর্মকর্তাদেরকে বদলি পদায়নের জন্য তদবির না করার আহ্বান জানিয়ে ড. রাজ্জাক আরও বলেন, আপনাদের অনেকেই প্রকল্পের পরিচালক (পিডি), প্রকল্প উপপরিচালক বা পছন্দমত পদে পদায়ন ও বদলির জন্য নানাভাবে তদবির করেন। এটি কোন মতেই কাম্য নয়। যারা তদবির করেন তাদেরকে আমি একদম পছন্দ করি না।
বিএডিসি কৃষিবিদ সমিতির সভাপতি রিপন কুমার মন্ডলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব সাজ্জাদুল হাসান, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম, বিএডিসির চেয়ারম্যান ড. অমিতাভ সরকার ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. নজরুল ইসলাম।
সাধারণ সভায় সারা দেশে কর্মরত বিএডিসির তিন শতাধিক কৃষিবিদ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।