অস্তিত্বহীন বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় ও ভুয়া স্টাডি সেন্টার বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
অস্তিত্বহীন বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় ‘আমেরিকান ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, ক্যালিফোর্নিয়া, ইউএসএ’ এর নামে এবার রাজধানী ঢাকায় ভুয়া স্টাডি সেন্টার পরিচালনা করছে লিংকনস হায়ার এডুকেশন এন্ড ম্যানেজমেন্ট নামে দেশীয় একটি প্রতিষ্ঠান।
অস্তিত্বহীন বিশ্বদ্যিালয়টির নামে একটি ওয়েববসাইট (https://www.aiuedu.org/) খোলা হয়েছে এবং শিক্ষার্থী ভর্তির বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে যা ইউজিসি’র নজরে এসেছে। ইউজিসি যাচাই করে দেখেছে যে, ইউএসএ’র ক্যালিফোর্নিয়ায় আমেরিকান ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি নামে যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলা হচ্ছে বাস্তবে তার কোন অস্তিত্ব নেই।
ভুয়া স্টাডি সেন্টারে শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়টি দেখভাল করছে লিংকনস হায়ার এডুকেশন এন্ড ম্যানেজমেন্ট নামে একটি প্রতিষ্ঠান। রাজধানী ঢাকার সিদ্ধেশ্বরীর শাহজালাল টাওয়ারে এজন্য একটি অফিস খোলা হয়েছে (http://www.aiuedu.org/index.php?page=international_collaboration)। ব্যাচেলর, মাস্টার্স, এমপিএইচ, এমবিএ, এমফিল ও পিএইচডি পর্যায়ে শিক্ষার্থী ভর্তির বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। সম্প্রতি ইস্যুকৃত বিজ্ঞপ্তিটি ইউজিসির নজরে এসেছে। বিজ্ঞপ্তিতে স্পেশাল স্কলারশিপ এবং ক্রেডিট ট্রান্সফারের সুবিধার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য পাঁচ হাজার একশত এবং পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য দশ হাজার ছয়শত ডলার নিচ্ছে।
আমেরিকান ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, ইউএসএ’র ওয়েবসাইটটি পর্যালোচনা করে দেখা যায় এটি ২০১৪ সালে বাংলাদেশের নওগাঁ জেলা থেকে খোলা হয়েছে। আমেরিকান ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইটে ব্যবহৃত একটি ছবি বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এটি ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ইউজিসি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য প্রসেফর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি ছাড়া বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়/প্রতিষ্ঠানের কোন শাখা ক্যাম্পাস/ স্টাডি সেন্টার ইত্যাদিতে শিক্ষার্থী ভর্তি বা শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
প্রফেসর চন্দ বলেন, অনুমতি ছাড়া বৈধ কোন বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাডি সেন্টার পরিচালনা করা অবৈধ। এক্ষেত্রে অস্তিত্বহীন বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ক্যাম্পাস পরিচালনা করা আইনের চরম লঙ্ঘন। এ ব্যাপারে তিনি ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীদেরকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। একইসঙ্গে তথাকথিত এই বিশ্ববিদ্যালয়/ স্টাডি সেন্টার থেকে প্রাপ্ত পিএইচডিসহ যেকোন ডিগ্রি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন।
প্রফেসর চন্দ সরকারের সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে অস্তিত্বহীন বিদেশি এ বিশ্ববিদ্যালয়টির ভুয়া স্টাডি সেন্টার বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেন।
উল্লেখ্য, এর আগে সৈয়দপুরে অস্তিত্বহীন বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে সতর্কবার্তা জারি করে ইউজিসি। কমিশনের দ্রুত ও যথাযথ পদক্ষেপের কারণে অস্তিত্বহীন ভুয়া এ বিশ্ববদ্যিালয়টির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।