একুশে পদকপ্রাপ্ত অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামান আর নেই। তিনি আজ শনিবার সকাল ৮টায় নিজ বাসায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
তিনি স্ত্রী, তিন মেয়ে ও দুই ছেলে রেখে গেছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
এ টি এম শামসুজ্জামানের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা: মুরাদ হাসান, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ প্রমুখ শোক ও দুঃখ প্রকাশ এবং মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন।
এ টি এম শামসুজ্জামান বেশ কয়েক বছর ধরে নানান শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন।
এর আগে ২০১৯ সালের ২৬ এপ্রিল রাতেও বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। সেদিন তাঁর খুব শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। সে রাতে তাঁকে রাজধানীর গেন্ডারিয়ার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
একই বছরের ডিসেম্বরে সর্বশেষ আবারও এ টি এম শামসুজ্জামানকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তবে দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর আগে চিকিৎসা শেষে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয় এ অভিনেতাকে।
১৯৪১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর দৌলতপুরে নানাবাড়িতেতে জন্মগ্রহণকারী এটিএম শামসুজ্জামান ১৯৬১ সালে পরিচালক উদয়ন চৌধুরীর ‘বিষকন্যা’ সিনেমায় সহকারী পরিচালক হিসেবে প্রথম কাজ শুরু করেন। ২০০৯ সালে ‘এবাদত’ নামের প্রথম সিনেমা পরিচালনা করেন এ টি এম শামসুজ্জামান।
তিনি প্রথম কাহিনি ও চিত্রনাট্য লিখেছিলেন ‘জলছবি’ সিনেমার জন্য। অভিনেতা হিসেবে এটিএম শামসুজ্জামানের অভিষেক ১৯৬৫ সালে। ১৯৭৬ সালে আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘নয়নমণি’ চলচ্চিত্রে খলনায়ক হিসেবে অভিনয় করে তিনি আলোচনায় আসেন।
সর্বমোট পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এছাড়া, শিল্পকলায় অসামান্য অবদানের জন্য ২০১৫ সালে তাকে একুশে পদকে ভূষিত করা হয়।
এ টি এম শামসুজ্জামান ১৯৮৮ সালে “দায়ী কে?” সিনেমায় অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এরপর শ্রেষ্ঠ কৌতুক অভিনেতা হিসেবে তিনি তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। “ম্যাডাম ফুলি” ছবিতে অভিনয়ের জন্য ১৯৯৯ সালে, “চুড়িওয়ালা” ছবিতে অভিনয়ের জন্য ২০০১ সালে, “মন বসে না পড়ার টেবিলে” ছবিতে অভিনয়ের জন্য ২০০৯ সালে এ পুরস্কার অর্জন করেন। তাছাড়া “চোরাবালি ” চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
এই গুণী অভিনেতা চলচ্চিত্রে সামগ্রিক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৯ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার আজীবন সম্মাননা লাভ করেন।