সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় প্রধান আসামি সাইফুরসহ আট জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) মো. আবুল কাশেমের আদালতে এই চার্জশিট প্রদান করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহপরান থানার ওসি (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য।
অভিযোগপত্র দাখিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার বি এম আশরাফ উল্যাহ তাহের। জানা গেছে, চার্জশিটে মামলার ছয় আসামিকে সরাসরি ধর্ষণে জড়িত এবং দুই জন সহায়তা করে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ধর্ষণে সরাসরি অভিযুক্তরা হলো- সাইফুর রহমান, শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি, তারেকুল ইসলাম তারেক, অর্জুন লস্কর, মো. রবিউল হাসান ও মাহফুজুর রহমান মাসুম। অন্যদিকে ধর্ষণে সহযোগিতার জন্য আসামি করা হয়েছে মো. আইনুদ্দিন ও মিসবাউল ইসলাম রাজনকে।
এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনার দুই মাস পর গত ২৯ নভেম্বর অভিযুক্ত আট আসামির ডিএনএ রিপোর্ট তদন্ত কর্মকর্তার কাছে এসে পৌঁছায়। ডিএনএ রিপোর্টে ছয় জনের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিলেছে বলে তদন্ত সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে।
এর আগে গত ১ অক্টোবর ও ৩ অক্টোবর দুই দিনে এই মামলায় গ্রেফতার আট জনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নমুনা সংগ্রহের পর ঢাকায় সিআইডির বিশেষায়িত ল্যাবে তা পরীক্ষা করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ওই গৃহবধূকে গণধর্ষণ করে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। এই ঘটনায় ছয় জনকে আসামি করে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের শাহপরান থানায় ওই নারীর স্বামী বাদী হয়ে মামলা করেন।
মামলার পর র্যাব ও সিলেট জেলা পুলিশের অভিযানে আট জনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারর সকলেই পাঁচ দিন করে রিমান্ড শেষে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়।
এছাড়াও গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত চার আসামির ছাত্রত্ব এবং সার্টিফিকেট বাতিল করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। পাশাপাশি তাদের স্থায়ীভাবে এমসি কলেজ থেকে বহিষ্কারও করা হয়। বহিষ্কৃতরা হলো- সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, মাহফুজুর রহমান মাসুম ও রবিউল হাসান।